নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: হাওড়া শহরের অন্যতম ব্যস্ত রাস্তা নেতাজি সুভাষ রোডে যানজট এখন আর কোনও বিচ্ছিন্ন সমস্যা নয়, তা কার্যত নিত্যদিনের স্বাভাবিক চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। দিনে দিনে রাস্তার দু’পাশ দখল করে অস্থায়ী দোকান বেড়ে চলেছে, তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অবৈধ পার্কিং ও টোটোর দাপট। সব মিলিয়ে যানজট ক্রমেই ভয়াবহ আকার নিচ্ছে। মল্লিক ফটকের মোড় থেকে কালীবাবুর বাজার পর্যন্ত প্রায় ৫০০ মিটার রাস্তা দখলদারির চাপে ক্রমশ সংকীর্ণ হয়ে পড়ায় সকাল থেকে সন্ধ্যা— এখন চলাচল করাই সাধারণ মানুষের পক্ষে দুষ্কর।
হাওড়া ময়দান সংলগ্ন মল্লিক ফটকের মোড় থেকে জি টি রোডকে রামরাজাতলার সঙ্গে যুক্ত করেছে নেতাজি সুভাষ রোড। বর্তমানে এই রাস্তায় হাঁটাচলা করাই কার্যত দুঃসাধ্য। রাস্তার দু’পাশে সারি সারি অস্থায়ী স্টল, ভ্যাট থেকে গড়িয়ে পড়া আবর্জনা, যত্রতত্র টোটো, বাইক ও গাড়ি পার্কিং— সব মিলিয়ে সংকীর্ণ হয়ে যাওয়া রাস্তায় সামান্য চাপ পড়লেই তৈরি হচ্ছে দীর্ঘ যানজট। সব থেকে করুণ অবস্থা মল্লিক ফটক থেকে কালীবাবুর বাজার পর্যন্ত। সকাল বা সন্ধ্যা নয়, দুপুরের দিকেও যানজট মাত্রা ছাড়াচ্ছে বলে অভিযোগ। স্থানীয়দের কথায়, কালীবাবুর বাজার সংলগ্ন আবর্জনার ভ্যাট দীর্ঘদিন ধরেই সমস্যার কারণ। ভ্যাট থেকে রাস্তায় আবর্জনা ছড়িয়ে পড়ায় গাড়ির গতি এমনিতেই কমে যায়। তার উপর পুরসভার লরি বা জেসিবি নিয়ে পরিষ্কারের কাজ শুরু হলে দু’দিকে আটকে পড়ে যানবাহন। পাশাপাশি প্রায় প্রতিটি স্থায়ী দোকানের সামনেই বসেছে অস্থায়ী ব্যবসায়ীরা। শাক-সবজি, ফল, জুতো সেলাই— কোনও কিছুরই অভাব নেই। অনেক স্থায়ী দোকানদারও ফুটপাত ছাড়িয়ে রাস্তায় পসরা সাজাচ্ছেন। ভরদুপুরে দেখা গেল, সংকীর্ণ রাস্তার ধারেই বাঁশ বেঁধে তৈরি হচ্ছে পুজোর প্যান্ডেল, ফলে পিঁপড়ের ঝাঁকের মতো আটকে পড়েছে যানবাহন।
এই রাস্তা দিয়েই রামরাজাতলা-ধর্মতলা ও রাজাবাজার রুটের একাধিক বাস চলাচল করে। পাশাপাশি পণ্যবাহী গাড়ির চাপ তো রয়েছেই। হাওড়া শহরের যে রাস্তাগুলিতে টোটোর আধিক্য সবচেয়ে বেশি, তার মধ্যে নেতাজি সুভাষ রোড অন্যতম। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা, দখলদারি ও যানজট এভাবে বাড়তে থাকলে আগামী দিনে এই রাস্তায় বাস চলাচল কঠিন হয়ে পড়বে। অভিযোগ, যানজট হলেও বেশিরভাগ সময়ে ট্রাফিক পুলিশের দেখা মেলে না। যদিও হাওড়া সিটি পুলিশের দাবি, ওই রাস্তায় যানজট নিয়ন্ত্রণে পরিকল্পনা করা হয়েছে। টোটোর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে এলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। -নিজস্ব চিত্র