হাওড়া পুরসভায় নেই পর্যাপ্ত আধিকারিক, পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন, মাত্র একজন করে সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার দিয়েই চলছে বরোগুলি
বর্তমান | ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: হাওড়া পুরসভায় জল সরবরাহ, জঞ্জাল সাফাই কিংবা বিল্ডিং সার্ভের মতো একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে পর্যাপ্ত আধিকারিক নেই। সীমিত অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারদের দিয়েই চলছে ৫০টি ওয়ার্ডের যাবতীয় পরিষেবার কাজ। এমনকি, বরো অফিসগুলিতেও মাত্র একজন করে সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। ফলে বেআইনি নির্মাণ রুখতে পুরসভার নজরদারি বা কীভাবে চলবে, আর নাগরিক পরিষেবা কতটা সচল থাকবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বোর্ডহীন পুরসভার নাগরিক পরিষেবা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষোভ রয়েছে শহরবাসীর। কোথাও বেহাল রাস্তা, কোথাও আবার নিকাশির সমস্যায় জেরবার হাওড়ার বিভিন্ন এলাকা। একাংশের অভিযোগ, পুরসভায় নির্বাচিত বোর্ড না থাকলেও এতদিন প্রশাসকমণ্ডলীর তরফে নাগরিক পরিষেবার কাজ ঠিকঠাক চলছিল। সম্প্রতি মুখ্য প্রশাসক ইস্তফা দেওয়ায় গোটা পুরসভার কাজ বর্তমানে ইঞ্জিনিয়ার নির্ভর হয়ে পড়েছে। এদিকে, হাতেগোনা আধিকারিককে নিয়ে কাজ চালাতে গিয়ে হাঁসফাঁস অবস্থা একাধিক দপ্তরের। জানা গিয়েছে, হাওড়া পুরসভার বিল্ডিং বিভাগে তিনজন সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার ও তিনজন অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার রয়েছেন। জল সরবরাহ বিভাগে রয়েছেন দু’জন সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার ও একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার। কনজারভেন্সিতে আছেন একজন ওএসডি, দু’জন সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার ও একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার। পুরসভার আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, ৫০টি ওয়ার্ডে যাবতীয় নাগরিক পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে এই সংখ্যা অনেকটাই কম। পুরসভার বরো অফিসগুলিতে রয়েছেন মাত্র একজন করে সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার। অর্থাৎ সাতটি ওয়ার্ডের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন মাত্র একজন করে। অথচ সেখানে অন্তত দু’-তিনজন প্রয়োজন।
পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, ‘নতুন বিল্ডিংয়ের নকশা অনুমোদন, জলের লাইন, মিউটেশনের কাজ ছাড়াও অবৈধ নির্মাণ রুখতে নিয়মিত ওয়ার্ডগুলিতে সার্ভে করা প্রয়োজন। কোনও বিল্ডিংকে বেআইনি ঘোষণা করার পর সেখানে কাজ বন্ধ হয়েছে কি না, তা দেখার মতো পর্যাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার নেই। সার্ভের কাজও ব্যাহত হচ্ছে।’ শুধু তাই নয়, নিকাশির সংস্কার, ডিসেল্টিং, স্ট্রিট লাইট সার্ভের মতো সমস্ত কাজ সামলাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের। জানা গিয়েছে, পুরসভার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা তিন এগজিকিউটিভ অফিসারও বর্তমানে অবসরের মুখে। এই অবস্থায় আগামী দিনে কীভাবে কাজ চলবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে পুরসভার অন্দরেই।