• ভিন রাজ্যে রপ্তানি, একবস্তা গাজর কেটে দেগঙ্গার গ্রামে মহিলাদের আয় ৪০ টাকা
    বর্তমান | ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫
  • শ্যামলেন্দু গোস্বামী, বারাসত: বঁটির একঘেয়ে শব্দে সকাল হলেই মুখর হয়ে ওঠে দেগঙ্গার চৌরাশি গ্রাম পঞ্চায়েতের একাধিক এলাকা। রোজগারের আশায় গ্রামের পর গ্রামের কয়েকশো মহিলা কাজে নেমে পড়েন। কাজ গাজর কেটে টুকরো করা। এক বস্তা গাজর কেটে টুকরো করে বস্তায় ভরতে পারলে মেলে ৪০ টাকা। চৌরাশি গ্রাম পঞ্চায়েতের একাধিক গ্রামে সকাল হলেই দেখা যাচ্ছে এই ছবি। 

    বাড়ির সামনে রাস্তার ধারে বসে একের পর এক মহিলা গাজর কাটছেন। কারও কোলে শিশু। কেউ সংসারের অন্য কাজ সামলে গাজর কাটছেন। গাজর টুকরো করে বস্তায় ভরে যন্ত্রচালিত ভ্যানে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ফাঁকা জায়গায়। সেখানে তা প্যাকেটে ভরা হচ্ছে। তা চলে যাচ্ছে বিভিন্ন আচার কারখানায়। বাংলার পাশাপাশি ভিন রাজ্যেও যাচ্ছে গাজর। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বারাসত, দেগঙ্গা, শাসন বা হাড়োয়া এলাকায় সব্জি চাষ হয়। তার মধ্যে ক্যাপসিকাম, বিট বা গাজর চাষ হয় বিঘার পর বিঘা জমিতে। পাইকারি দামে এই সব্জি চলে যায় ভিনরাজ্যে। শীতের মরসুমে আচার তৈরির জন্য গাজর কাটার এখন ব্যাপক চল তৈরি হয়েছে। চৌরাশি পঞ্চায়েতের রাজুকবেড়িয়া, দক্ষিণ চৌরাশি, শিমুলিয়া, ঢালিপাড়া সহ কয়েকটি গ্রামের মহিলারা এই কাজে যুক্ত। স্থানীয় বাসিন্দা রূপা কাহার বলেন, সকাল থেকে এই কাজ শুরু হয়। সারাদিনে তিন-চার বস্তা কাটা যায় সংসার সামলেও। স্থানীয় ব্যবসায়ী গাজর দিয়ে যান। আমরা কেটে তাদের দিয়ে দি। এগুলি আচার তৈরির জন্য বাংলা ও ভিন রাজ্যে যায়। 

    এদিকে ভূমি কাহার নামে আর এক গৃহবধূ বলেন, স্বামীর রোজগার সবসময় নিয়মিত হয় না। এই কাজের টাকা দিয়ে অন্তত সংসারের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনা যায়। মাস ছ’য়েক এই কাজ হবে। রাজিয়া বিবি বলেন, এই কাজে শারীরিক পরিশ্রম কম নয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে ধারালো বঁটিতে গাজর কাটতে গিয়ে হাতে ফোসকা পড়ছে। কখনও কেটে যাচ্ছে আঙুল। নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)