দু’টি ঘর থেকে উদ্ধার বাবা ও ছেলের ঝুলন্ত দেহ, কারণ নিয়ে তুমুল জল্পনা
বর্তমান | ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, বজবজ: মঙ্গলবার মহেশতলা পুরসভার ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের পুটখালি মধ্যপাড়ায় এক বাড়ির পাশাপাশি দু’টি ঘর থেকে বাবা ও কিশোর ছেলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। এদিন দুপুরে মহেশতলা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। দেহ দু’টি দ্রুত নামিয়ে বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশ জানিয়েছে মৃত বাবা-ছেলের নাম যথাক্রমে বাপ্পা নস্কর (৪০) এবং রূপম নস্কর (১৪)। দু’টি ঘর থেকে আলাদা দু’টি সুইসাইড নোট পাওয়া গিয়েছে। তাতে লেখা, ‘আমরা নিজেরাই এই পথ বেছে নিলাম।’ যদিও পুলিশ সূত্রে খবর, বাপ্পার সুইসাইড নোটে আরও বেশ কিছু কথা আছে। তাতে আত্মহত্যার কারণ নিয়ে কিছু ইঙ্গিত পাওয়া যেতে পারে। স্বাভাবিকভাবেই পুলিশ তদন্ত শেষ না করে এখনই কিছু প্রকাশ্যে আনতে নারাজ। আপাতত পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। মৃতদেহ দু’টি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। রাত পর্যন্ত কোনও অভিযোগ হয়নি থানায়। ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
পড়শিদের একাংশের দাবি, সম্পর্কের জটিলতা নিয়ে বাপ্পার সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর প্রায়শই অশান্তি হত। চলতি মাসের প্রথম দিন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তুমুল অশান্তি হয়। গত ৫ ডিসেম্বর থেকে তাঁর স্ত্রীকে এই বাড়িতে আসতে দেখা যায়নি। বিষয়টি নিয়ে মনমরা হয়ে থাকতেন বাপ্পা। বাবার এই মানসিক পরিস্থিতির প্রভাব পড়ে কিশোর ছেলের উপরও। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, এসব অশান্তির কারণে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন বাবা ও ছেলে। তাছাড়া, বাইরের লোকজনের মুখে স্ত্রীর নাম. অশ্লীল সমালোচনা শুনতে শুনতে বাপ্পা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন বলেও দাবি প্রতিবেশীদের। এসব কারণেই বাবা-ছেলে আলোচনা করে একসঙ্গে আত্মঘাতী হয়ে থাকতে পারেন বলে মনে করছেন তাঁরা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বাপ্পা নস্কর পেশায় একজন গাড়িচালক। নিউ আলিপুরে একটি বেসরকারি সংস্থার গাড়ি চালাতেন। ছেলে রূপম অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ছিল। বাপ্পার বৃদ্ধ বাবা থাকেন গ্রামের বাড়িতে। তদন্তকারীরা ইতিমধ্যে জেনেছেন, স্ত্রীর পরকীয়া সম্পর্ক বেশ কয়েকবার হাতেনাতে ধরেও ফেলেছিলেন বাপ্পা। এসব নিয়ে অশান্তি লেগে ছিল। সম্প্রতি গোলমাল চূড়ান্ত জায়গায় পৌঁছোনোয় তাঁর স্ত্রী খড়দহে বাপের বাড়িতে থাকছেন। আরও জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে বাড়ি ফিরে বাপ্পা তাঁর বৃদ্ধ বাবাকে ফোন করেন। বলেন, ‘বাবা তোমাকে অনেকদিন দেখিনি। মঙ্গলবার একবার এসো পুঁটখালিতে।’ এদিন ১০টার সময় বাবা পুঁটখালিতে ছেলের বাড়িতে আসেন। এসেই দেখেন মর্মান্তিক দৃশ্য।