• Explained: চিনের করোনার কী অবস্থা? জানুয়ারিতে ভারতেও ছড়াতে পারে? কী বলছেন বিজ্ঞানীরা?
    ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস | ০১ জানুয়ারি ২০২৩
  • চিনে করোনার প্রাদুর্ভাব ব্যাপক হারে বৃদ্ধির সঙ্গেই বিজ্ঞানীরা এখন এর পরিণতি নিয়ে চিন্তা করছেন। কয়েক লক্ষ মানুষের স্বাস্থ্য, বিশ্ব অর্থনীতি এবং অতিমারির প্রভাব তাঁদের এখন চিন্তার বিষয়। গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মত চিনের থেকে বিশ্বাসযোগ্য তথ্য মিলছে না। তাই সমস্যা আরও বাড়ছে। অবস্থা সামলাতে হংকং-এ গবেষকদের একটি দল করোনার সম্ভাব্য সম্পর্কে আন্দাজ পেতে বেজিং সাবওয়ের পাঁচটি লাইনের যাত্রীদের থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছেন।

    সিয়াটলে, আবার চিনের স্বাস্থ্যকর্তাদের থেকে গোপনে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু, সেই গোপন কায়দায় সংগ্রহ করা তথ্য ঠিকঠাক মনে করছেন না বিশেষজ্ঞরা। ব্রিটেন আবার চিনের ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা পরীক্ষা করে দেখছে। বিজ্ঞানীরা এখন যেটা বোঝার চেষ্টা করেছেন, চিনে আদৌ করোনা ঠিক কতটা দ্রুত ছড়িয়েছে। কত মানুষ মারা যাচ্ছেন। চিনে করোনার নতুন কোনও স্ট্রেন ছড়িয়েছে কি না। অথবা সংক্রমণের নতুন কোনও উৎস তৈরি হয়েছে কি না।

    এই পরিস্থিতিতে যেভাবে যেটুকু বিশ্বাসযোগ্য তথ্য পাচ্ছেন, তাই দিয়েই বিজ্ঞানীরা চিনে করোনার উৎস অনুসন্ধানের চেষ্টা চালাচ্ছেন। পাশাপাশি, বোঝার চেষ্টা চালাচ্ছেন ভবিষ্যতে বড় কোনও বিপদ অপেক্ষা করে আছে কি না। শেষ পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা সতর্কতার সঙ্গে আশঙ্কা করছেন, সবচেয়ে খারাপ যেটা হতে পারে, তা হল চিনে করোনা আগামী চার মাসে সেই সংখ্যক লোককে মেরে ফেলতে পারে, যতটা পুরো তিন বছরের অতিমারিতে আমেরিকায় হয়েছে।

    তবে, সবটাই আশঙ্কা। তবে, সেই আশঙ্কার কথা মাথায় রেখেই বেশি কিছু দেশ চিনের বাসিন্দাদের সেদেশে ভ্রমণ করতে দিতে নারাজ বলে জানিয়েছে। যদিও আংশিক তথ্য, ভিত্তিহীন ভয় এবং রাজনৈতিক ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণাও এই সব বিধিনিষেধের জন্য অনেকখানি দায়ী। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি এবং জাপান বলেছে যে চিন থেকে তাদের দেশে আগতদের জন্য একটি COVID নেগেটিভ পরীক্ষার দরকার পড়বে। যদিও গবেষক এবং ভাইরোলজিস্টদের একাংশ বলছেন, করোনা পরীক্ষাতেও অনেক সময় বর্তমান সংক্রমণ ধরা পড়ছে না। সেক্ষেত্রে কোভিড নেগেটিভ পরীক্ষার ফল কোনও কাজে আসবে না।

    চলতি মাস পর্যন্ত, চিনের শাসক কমিউনিস্ট পার্টি গর্বিতভাবে তার জিরো কোভিড নীতির পক্ষে গলা চড়িয়েছে। দৈনিক সংক্রমণ এবং মৃত্যু কম বলে দেখিয়েছে। দাবি করেছে যে লকডাউন, কোয়ারান্টাইন এবং গণপরীক্ষার জন্যই চিনে করোনা সেভাবে প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি। কিন্তু, ডিসেম্বরের গোড়ার দিকে, চিনের সরকার জনগণের চাপে আচমকা ‘শূন্য কোভিড’ নীতি পরিত্যাগ করে।

    আর, তার ফলেই চিনে সংক্রমণ বেশি ছড়িয়েছে বলে মনে করছেন করোনা গবেষক তথা ক্লিনিকাল ভাইরোলজিস্ট সিদ্ধার্থ শ্রীধর। আর, সেই কারণেই গবেষকরা জানাচ্ছেন, চিন থেকে যেন করোনা ভারতে প্রবেশ করতে না-পারে, সেদিকে বিশেষ নজর রাখা দরকার। পাশাপাশি, গবেষকরা আগেই আশঙ্কা করেছেন যে জানুয়ারিতে ভারতে করোনার ঢেউ আসতে পারে। তাই সতর্কতা জরুরি।
  • Link to this news (ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস)