• Mamata On Honesty: লোভ সম্বরণ করুন; মাথা উঁচু করে চলুন, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে কর্মীদের কড়া বার্তা মমতার
    ২৪ ঘন্টা | ০২ জানুয়ারি ২০২৩
  • শ্রেয়সী গঙ্গোপাধ্যায়: পঞ্চায়েত নির্বাচন সামনেই। তার আগে দলের কর্মীদের মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়ার দিক নির্দেশ করলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। দিদির সুরক্ষ কবচ নামে একটি প্রকল্পের সূচনও করলেও মমতা। সেই প্রকল্পের মাধ্যমে মানুষের ঘরে ঘরে দলের কর্মীদের পৌঁছে দেওয়ার বার্তা দেওয়া হল। তবে নজর কাড়ল কর্মীদের লোভ সামলানোর বার্তা নিয়ে। এর পেছনে পঞ্চায়েত নির্বাচনের পাশাপাশি লোকসভা নির্বাচনের কথাও মাথায় রাখা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

    আরও পড়ুন-

    সোমবার নজরুল মঞ্চে কর্মীদের উদ্দেশ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমি কী পাব সেদিকে আশা না করে সঠিকভাবে চলুন, সত্ভাবে চলুন, মাথা উঁচু করে চলুন। এই জীবনটা খুব দামী। এই জীবনটাই আমাদের অলঙ্কার। ভালো কাজ করলে পাড়ায় বলবে ছেলেটা খুব সত্। এর থেকে বড় সার্টিফিটেক আর কেউ দেবে না। লোভ সম্বরণ করবেন, লোভ সামলাবেন। ছোটদেরও বোঝাবেন। এটাই আমাদের ঐতিহ্য। এটাই আমাদের সংস্কৃতি। প্রসঙ্গত, আবাস যোজনা ও নিক্ষন নিয়ে নিয়ে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগে জেরবার তৃণমূল কংগ্রেস। তার মধ্যে দলনেত্রীর কর্মীদের সত্ থাকার বার্তা যথেষ্টই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।   

    মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় বলেন, দলটা একদিনে তৈরি হয়ে যায়নি। বললাম আর দল হয়ে গেল এমনটা হয় না। তৃণমূল কংগ্রেস যখন তৈরি করি তখন বহু লোককে দিয়ে আমাদের বলা হয়েছিল কংগ্রেস ভেঙে নতুন দল করো না। টিকতে পারবে না। আমরা সেদিন শুনিনি। কেন না, আমরা বহুদিন সহ্য করেছিলাম। ভাবতাম আজ হবে, হয়তো কাল হবে। কিন্তু সিপিএমের বিরুদ্ধে কিছু হয়নি। কারণ বাম-কংগ্রেস এক হয়ে গিয়েছিল। আমরা বলতাম তরমুজ। এখন যেমন বাম-রাম এক হয়ে গিয়েছে। তেমনটাই তখন হয়েছিল।

    বিজেপির কথা বলতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, যখন যা করেছি তা চাপা দিয়ে কিছু করিনি। কোনওদিন সরাসরি বিজেপি আমরা করিনি। কারণ ওদের আদর্শ আমরা মানতে পারি না। ওদের আদর্শটা অনেকটা একাকীত্বের মতো। আমি খাব, আর কেউ খাবে না। এটা হয় না। আমি একটা ধর্ম মানব আর অন্য ধর্মকে সম্মান করব না। এসব ভাবার কোনও কারণ নেই। আমাদের বাধ্যবাধকতা ঠিক করে দিয়েছে আমাদের সংবিধান। এখন আমাদের ইতিহাস ভুলিয়ে দেওয়া হচ্ছে, ভূগোল ভুলিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ঐতিহ্য ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে, সংস্কৃতি ভুলিয়ে দেওয়া হচ্ছে। শুভ দিন আসবে নতুন দিন আসবে। মানুষ নিশ্চয় আস্চে আস্তে এগোবে সভ্যতার দিকে। সভ্যতার আলো সে-ই জ্বালতে পারে যে মানবিকতার আলো জ্বালতে পারে। 

    স্বামী বিবেকানন্দ উন্নততর মানুষ গড়ার কথা বলতেন। এই কাজটা করার জন্য কেউ একদিন এগিয়ে আসবে। তার তার প্ররণাটা অনন্ত আমরা জুগিয়ে য়াই। উন্নততর জীবনটা আমাদের লক্ষ্য। যাতে আমরা চলে গেলেও মানুষ আমাদের কথা মনে রাখে। ভেবে দেখুন, আপনার বাড়ি আছে, গাড়ি আছে কিন্তু শরীর ভালো নেই। অথবা আপনার সব আছে, কথা বলার কেউ নেই। তাহলে ওসব থেকে কী হবে? এসব প্র্যাকটিক্যাল কথা। ভেবে দেখতে হবে। সৌগতরা জানে আমি যখন এমপি ছিলাম ১৯৯১ সাল থেকে কোনও দিন একজিকিইটিভ ক্লাসে চড়িনি। একবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তার পর তা আর বদল করিনি। কেন আমাকে চুরি করতে হবে? এমপি ছিলাম, এক লক্ষ টাকা পেনশন হয়ে গিয়েছে। 

    রাজ্যের উন্নয়নের কথা বলতে গিয়ে মমতা বলেন, একসময় পিজিতে কাউকে ভর্তি করাতে গিয়ে জুতোর সোল ক্ষয়ে যেত। গ্রাম থেকে মানুষজন এসে পড়ে থাকতো। কিন্তু আপনারা কি জানেন, প্রায় ৩০ হাজার বাচ্চার হার্ট অপারেশন করে দেওয়া হয়েছে বিনা পয়সায়? প্রকল্পের নাম শিশু সাথী।  এখন সরকারি হাসপাতালের চিকিত্সা বিনা পয়সায় করে দিয়েছি। আমরা এখানে একটা কর্ড ব্লাড ব্যাঙ্ক তৈরি করেছি। ওই ব্লাড মানুষকে নতুন জীবন দিতে পারে। মনে রাখবেন যতক্ষণ সুস্থ থাকবেন সেটাই আপনার বয়স। সঠিক ভাবে চলুন। ঠিক পথে চলুন। মাথা উঁচু করে চলুন। সত্ পথে চলুন। লোভ সম্বরণ করবেন, লোভ সামলাবেন। ছোটদেরও বোঝাবেন।
  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)