• ভেঙে পড়েছেন পার্থ, চাঙ্গা করতে জেলে পূর্ণ সময়ের মনোবিদ নিয়োগ করছে কারাদপ্তর
    বর্তমান | ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
  • দীপঙ্কর মণ্ডল, কলকাতা: তিনি ছিলেন রাজ্যের প্রথম সারির মন্ত্রী। শাসক দলের মহাসচিব। প্রভাব বা দাপট—সবেতেই ছিলেন অগ্রগণ্য। সেই পার্থ চট্টোপাধ্যায় প্রায় সাত মাস জেলবন্দি। রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় ফেলে দেওয়া নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত হিসেবে বিচারাধীন বন্দি তিনি। জামিনে মুক্তির  অপেক্ষা দীর্ঘতর হয়েই চলেছে। বেড়ে চলেছে বন্দিদশার মেয়াদ। তাক লাগানো বিলাসিতার জীবন ছেড়ে আধা অন্ধকার গারদে থাকতে থাকতে পার্থবাবু এখন মানসিকভাবে বিধ্বস্ত। কারাদপ্তর সূত্রে খবর, একেবারে ভেঙে পড়েছেন তিনি। তাই মানসিকভাবে তাঁকে চাঙ্গা করতে প্রেসিডেন্সি জেলে পূর্ণ সময়ের মনোবিদ নিয়োগ করা হচ্ছে। 

    এ প্রসঙ্গে ফিরে ফিরে আসছে তাঁর আগেকার জীবনযাত্রার কথা। রাজ্য মন্ত্রিসভার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে পাইলট কার, পুলিসের একাধিক গাড়ির নিশ্চিন্ত ঘেরাটোপে ছিল তাঁর আনাগোনা। তাঁর পোষা সারমেয়রাও থাকত শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে। কারাদপ্তর সূত্রে খবর, শীতকাল কোনওরকমে কাটলেও এপ্রিল-মে মাসের গরমের আতঙ্ক গ্রাস করেছে পার্থকে। ইদানিং রক্ষীদের ডেকে তিনি জানতে চাইছেন, এই জেলে গরমকালে বন্দিরা কতটা কষ্ট পায়। প্রহরীরা অবশ্য তাঁকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, এসব ব্রিটিশ আমলের নির্মাণ। অনেক মোটা গাঁথনি হওয়ায় হওয়ায় গরমের তীব্রতা কম থাকে সেলের ভিতর। 

    পার্থর পাসের সেলেই আছে আমেরিকান সেন্টারে হামলা ও খাদিমকর্তা অপহরণের অভিযুক্ত কুখ্যাত আফতাব আনসারি। তাঁর সহবন্দিদের মধ্যে আছেন সারদাকর্তা সুদীপ্ত সেন, রোজ ভ্যালির গৌতম কুণ্ডু প্রমুখ। কারাদপ্তর সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, কিছুদিন আগে পর্যন্তও পার্থ অন্য আসামীদের খবর নিতেন। কিন্তু এখন খুব একটা কথাই বলেন না। কারারক্ষীদের বক্তব্য, তাঁর মানসিক অবসাদ বাড়ছে। তাই প্রেসিডেন্সি জেলেতে একজন মনোবিদ আনা হচ্ছে। কারামন্ত্রী অখিল গিরি বলেন, ‘প্রেসিডেন্সি জেলের পাশাপাশি অন্য সংশোধনাগারে থাকা বন্দিদেরও মানসিক চিকিৎসা করানো হবে। মোট আটজন মনোবিদ নিয়োগ করা হবে। এক বছরের চুক্তিতে নির্দিষ্ট সাম্মানিকের বিনিময়ে তাঁরা পূর্ণ সময় কাজ করবেন।’ কয়েদিদের মানসিক চিকিৎসায় মনোবিদ রাখা অবশ্য নিয়মের মধ্যেই পড়ে। কিন্তু রাজ্যের কোনও জেলেই পূর্ণ সময়ের মনোবিদ নেই। পার্থর বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায় আছেন আলিপুর মহিলা সংশোধনাগারে। তবে তাঁর জন্য এখনই মনোবিদ প্রয়োজন নেই বলেই সূত্রের খবর। এক কারাকর্তা জানিয়েছেন, যে কোনও অসুখে দেখভালের জন্য জেলের ভিতরেই থাকেন ডাক্তার। বিভিন্ন সংশোধনাগারের জন্য নতুন করে কয়েকজন চিকিৎসকও নিয়োগ করা হবে। 
  • Link to this news (বর্তমান)