• বাউলের দেশে এসে মিশল মিশরীয় সুফি ও আয়ারল্যান্ডের লোকসঙ্গীত
    বর্তমান | ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
  • সংবাদদাতা, কাটোয়া: বিশ্বশান্তিতে সংগীতের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চারিদিকে যুদ্ধের আবহে শান্তি ফেরাতে সঙ্গীতকেই হাতিয়ার করেছেন একদল মিশরীয়, উত্তর আয়ারল্যান্ডের শিল্পীরা। মিশরের নীলনদ আর পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের কুনুরনদীর জল মিশল সুরের মূর্ছনায়। সোমবার সন্ধ্যায় বাংলা নাটক ডট কমের সুরজাহান দুই নদীর জলে মেলবন্ধন ঘটাল। ইজিপ্ট, উত্তর আয়ারল্যান্ডের  ঘূর্ণায়মান দারভিশ নৃত্য, লোকসংগীত মাতাল আউশগ্রামের বননবগ্রাম বাউল আশ্রম। 

    এদিন আউশগ্রামের বননবগ্রামের আশ্রমে আসেন ইজিপ্টের ‘মউলাইয়া’ শিল্পীরা। আর উত্তর আয়াল্যান্ডের বেলফাস্টের এর ‘মাডাগন’ নামক লোক সঙ্গীত ব্যান্ড। তাঁরা বিশ্বশান্তির লক্ষ্যে অসাধারণ সুরের মিশেল তৈরি করেন। যা আউশগ্রামের বাসিন্দাদের মুগ্ধ করে। শুধু তাই নয়, এদিন বাউল শিল্পী সাধন দাস বৈরাগ্য আসেন। আর ইজিপ্টের লোকশিল্পী আমের এলটনি পূর্ব বর্ধমানের বাউল শিল্পী সাধন দাস বৈরাগ্যের সঙ্গে ভাবের আদান প্রদান করেন। দু’ জনেই জড়িয়ে ধরে ঘুচিয়ে দেন দুই দেশের ব্যবধান। শুধু বাউলের টানেই দুই দেশের শিল্পীরা এক মিলন মঞ্চ গড়ে তোলেন আউশগ্রামে। এদিন মিশনের প্রখ্যাত ঘূর্ণায়মান সুফি দারভিশ নৃত্য পরিবেশন করেন সে দেশের শিল্পী আমের এলটনি। আর সেই নৃত্য আউশগ্রামে বসে দেখেন বাংলা চলচিত্র অভিনেতা আশিস বিদ্যার্থী। 

    জানা গিয়েছে,  ২০১১ সালে প্রথম আসরেই গান আর দারভিশ নাচে ইজিপ্টের মউলাইয়া’র শিল্পীরা শহর মাতিয়েছিলেন। দলনায়ক আমের এলটনির ভাবসঙ্গীত আর নর্তকদের লাগাতার ঘূর্ণায়মান নৃত্যে এক অন্য জগতে পৌঁছে যান দর্শক শ্রোতারা। নাচ ও গানের মধ্যে দিয়ে ঈশ্বরের সঙ্গে সংযোগ গড়ে তোলেন শিল্পীরা। শিল্পীর ভক্তি, বিশ্বাস এবং দক্ষতা তাঁদের পরিবেশনকে অনন্য করে তোলে। দারভিশ নৃত্যের ঐতিহ্যকে রক্ষা করার জন্য ১৯৯৪ সালে আমের এলটনি এই দল গড়ে তোলেন। 

    বাংলা নাটক ডট কমের উদ্যোগে সুরজাহান অনুষ্ঠানের এক উদ্যোক্তা স্নেহা ভট্টাচার্য বলেন, যুদ্ধের আবহে সঙ্গীত খুব প্রয়োজন। আমরা মনে করি, শান্তি ফেরাতে একমাত্র সঙ্গীতই হাতিয়ার। তাই দুই দেশের সুরের আদান প্রদান ঘটাতেই এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷ এদিকে উত্তর আয়ারল্যান্ডের বেলফাস্টের ফোক ব্যান্ড ‘মাডাগন’ গত পাঁচ বছরে ইউকের তিনটি শ্রেষ্ঠ মিউজিক অ্যাওয়ার্ড জিতেছে। উলিয়েনান পাইপস এবং কনসের্টিনা নামে দুটি ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার তাদের পরিবেশনাকে বিশিষ্ট করে তুলেছে। উত্তর আয়ারল্যান্ডের শিল্পী জেশন অরুর্ক বলেন, আমি কলকাতায় কয়েকদিন আগে এসেছি। সেখানেও সঙ্গীত পরিবেশন করেছি। খুব ভালো লেগেছে। তাই আউশগ্রামে এসেও সঙ্গীত পরিবেশন করলাম। 

    বাংলা নাটক ডট কমের কর্ণধার অমিতাভ ভট্টাচার্য বলেন, আউশগ্রামে এমন সঙ্গীতের মিশেল এই প্রথম। বাংলা বাউলের টানে সব দেশের শিল্পীদের ব্যবধান মুছে যাবে। 
  • Link to this news (বর্তমান)