• ধরলার জমিদার মিঁয়া ঘাটে পূরণ হয়নি সেতুর দাবি, সাঁকোই ভরসা ৩টি গ্রামের
    বর্তমান | ১৪ মার্চ ২০২৩
  • সংবাদদাতা, দিনহাটা: দিনহাটা-১ ব্লকের ভেটাগুড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের ধরলা নদীতে জমিদার মিঁয়া ঘাটে সেতুর দাবি বহুদিনের। বর্তমানে বাঁশের সাঁকোই ভরসা তিনটি গ্রামের কয়েক হাজার বাসিন্দার। বর্ষার মরশুমে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাঁকোর উপর দিয়ে যাতায়াত করতে হয় তাঁদের। ফলে ধরলা নদীর জমিদার মিঁয়া ঘাটে কংক্রিটের সেতুর দাবি দীর্ঘদিনের। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, প্রতিটি ভোটের আগে সেতু নির্মাণের আশ্বাস মিললেও পরবর্তীতে কাজের কাজ কিছুই হয় না। পঞ্চায়েত ভোটের মুখে তাই নদীতে সাঁকোর পরিবর্তে পাকা সেতুর দাবিতে সরব হয়েছেন ভুক্তভোগী বাসিন্দারা। 

    গ্রামবাসীরা বলেন, ভোট এলেই গ্রামে নেতা-মন্ত্রীরা আসেন। তাঁদের কাছে জমিদার মিঁয়া ঘাটে পাকা সেতু নির্মাণের দাবি জানালে তাঁরা আশ্বাস দেন। বহু আগে সরকারি কর্মীরা এসে কয়েকবার মাপজোকও করে গিয়েছেন। কিন্তু, সেতু তৈরির সেই আশ্বাস বাস্তবে রূপ পায়নি। 

    বালাডাঙার বাসিন্দা মাজেদা বিবি বলেন, আমরা তিনটি গ্রামের মানুষ এই ঘাট দিয়ে যাতায়াত করি। বর্ষার সময় নদীর জল বেড়ে গেলে তখন জীবন হাতে নিয়ে পারাপার করতে হয়। এমনও হয়েছে সাঁকো থেকে নদীতে টোটো পড়ে গিয়েছে। 

    রহিমুল রহমান বলেন, আমরা কৃষিজীবী মানুষ। জমির উৎপাদিত ফসল বেহাল সাঁকো দিয়েই হাটে নিয়ে যেতে বাধ্য হই। সেতুর দাবি পঞ্চায়েত প্রধান, জেলা পরিষদ থেকে শুরু করে বিধায়ককেও জানিয়েছি। কিন্তু, আজও আমাদের দাবি পূরণ হল না। আমরা চাই অবিলম্বে এই ঘাটে একটি পাকা সেতু তৈরি করে দিক সরকার। ভেটাগুড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ওলেমা বিবি বলেন, এলাকার মানুষের এটা দীর্ঘদিনের দাবি। এখনও সেতু তৈরির কাজ না হওয়ায় স্থানীয় মানুষের মধ্যে কিছুটা ক্ষোভ রয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করে চেষ্টা চালাচ্ছি যাতে জমিদার মিঁয়া ঘাটে পাকা সেতু করা যায়। এই দাবির কথা এলাকার জেলা পরিষদের সদস্য ছাড়াও স্থানীয় বিধায়ককে জানানো হয়েছে। 

    স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক জগদীশচন্দ্র বসুনিয়া বলেন, কয়েকটি নদীঘাটে সেতু নির্মাণের জন্য রাজ্যে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। অনুমোদন এলেই সেতুগুলি নির্মাণের কাজ শুরু হবে। 

    ভেটাগুড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের মাঝ দিয়ে বয়ে গিয়েছে ধরলা নদী। এই নদীর জমিদার মিঁয়া ঘাটে নদীর দু’পাড়ের বাসিন্দাদের বাঁশের সাঁকোই ভরসা। বালাডাঙা, বোরোডাঙা, পূর্ব ভূতকুড়া গ্রামের প্রায় চার হাজার মানুষ সাঁকোর উপর দিয়েই যাতায়াত করে। বছরে দু’বার গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে সাঁকো বানিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু, এত বিপুল সংখ্যক লোকজন চলাচল করায় কিছুদিনের মধ্যেই তা বেহাল হয়ে পড়ে। ফলে বেহাল সাঁকোই ভরসা নদী ওপরের সংশ্লিষ্ট তিনটি গ্রামের বাসিন্দাদের। বর্ষার সময় ধরলা নদী ফুলেফেঁপে উঠলে সমস্যা তখন আরও বাড়ে। স্কুল কলেজ পড়ুয়ারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বর্ষার সময়ে পারাপার হয়। কৃষকরা তাঁদের উৎপাদিত ফসল হাটে নিয়ে যেতে সমস্যায় পড়েন।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)