• ষষ্ঠীর সন্ধ্যা মুর্শিদাবাদের মণ্ডপে মণ্ডপে জনজোয়ার
    বর্তমান | ০২ অক্টোবর ২০২২
  • অভিষেক পাল, বহরমপুর: ষষ্ঠীর সকাল থেকেই মণ্ডপে সেই চেনা ভিড়। বিকেলের পর থেকে মুর্শিদাবাদ জেলার বিভিন্ন পুজো মণ্ডপগুলি জনজোয়ারে ভাসল। বড় পুজোর মণ্ডপগুলিতে কার্যত তিল ধারণের জায়গা ছিল না। আলোয় ভাসতে থাকে শহর থেকে গ্রাম। কলকাতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে মহালয়া থেকে মুর্শিদাবাদের একাধিক পুজোর উদ্বোধন হয়েছে। পঞ্চমী থেকে পুরোদমে ঠাকুর দেখার পালা শুরু হয়। থিম, সাবেকিয়ানা, নান্দনিকতায় মিলেমিশে জেলবাসী পুজোর প্যান্ডেল হপিংয়ে কোনও খামতি রাখছেন না। 

    ষষ্ঠীতে দেবীর বোধন। বোধনের পর দেবীর অধিবাস। বিল্ববৃক্ষের তলায় দেবীর আরাধনা। গণেশ, কার্তিক, লক্ষ্মী, সরস্বতী সপরিবারে একরাত সেখানেই থাকবেন মা দুর্গা। সপ্তমীর সকালে পা দেবেন বাপের বাড়িতে। জেলাজুড়ে মহোৎসবের আবহ। মুর্শিদাবাদ জেলার কান্দি, বহরমপুর, ডোমকল, জঙ্গিপুর, মুর্শিদাবাদ, জিয়াগঞ্জ সহ সব জায়গাতেই এক ছবি। ষষ্ঠীর সকাল থেকেই ঠাকুর দেখার ভিড় জমতে থাকে। নতুন জামাকাপড়, নতুন জুতো পরে দুপুর থেকে বেরিয়ে পড়েন অনেকে। সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া চলে। উৎসবের আনন্দে ভাসে শহরগুলি।

    জেলার অধিকাংশ মণ্ডপ উদ্বোধনের পর প্রথম দু’দিন সেভাবে ভিড় ছিল না। অনেক পুজো উদ্যোক্তা উদ্বোধনের পরও মণ্ডপে শেষ মুহূর্তের কাজ করছিল। তবে চতুর্থী থেকে মণ্ডপে ভিড় শুরু হতে থাকে। পঞ্চমীর আগেই জেলার সমস্ত বড় পুজোগুলির উদ্বোধন হয়ে যায়। তাই বৃষ্টির আশঙ্কায় দেরি না করে মানুষ বেরিয়ে পড়েছেন। দুপুর থেকেই মানুষ পুজোর মণ্ডপে ঘুরছেন। তিনকোনা মহিলা দুর্গাপুজোর মণ্ডপে দাঁড়িয়ে বহরমপুর পুরসভার কাউন্সিলার সৌমিমা চট্টরাজ বলেন, বহরমপুরে প্রত্যেকটি পুজো মণ্ডপে বিকেল থেকেই প্রচণ্ড ভিড় হচ্ছে। এখানে মহিলা পরিচালিত পুজো দেখতে দর্শনার্থীরা আসছেন। তাঁদের কোনও অসুবিধা হচ্ছে কি না দেখতে এসেছি। ষষ্ঠীর দিনেই প্রচণ্ড ভিড়। বৃষ্টি ভেস্তে না দিলে  বাকি দিনগুলিতে প্রচুর ভিড় হবে।

    পুজোর মধ্যে বৃষ্টির ভ্রুকুটি রয়েছে। তাই আগেভাগে পুজোর মণ্ডপে গিয়ে ঠাকুর দেখে নিতে যেতে চাইছেন অনেকে। অনেক যুবক-যুবতী আবার জেলার পুজো দেখে কলকাতায় ঠাকুর দেখতে যাবেন। বহরমপুরের যুবক অন্বেষণ রায় বলেন, অষ্টমী-নবমী কলকাতায় ঠাকুর দেখতে যাব। তাই আগে থেকে বহরমপুরের ভালো পুজোগুলি দেখে নিচ্ছি। এখানে বেশ কয়েকটি পুজো কলকাতার মণ্ডপকেও হার মানাবে। 

    ভট্টাচার্য পাড়ার পুজোর দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে প্রবীণ দর্শনার্থী একটু বিরক্ত হয়ে বলেন, এই মণ্ডপে ঠাকুর দেখার জন্য এক ঘণ্টা ধরে দাড়িয়ে আছি। লম্বা লাইন দিয়ে এসে দু’টি গেট পেরতে হচ্ছে। সেখানেও লাইন। ভিতরে লেজার লাইটের শো চলছে বলে একটু বেশি সময় লাগছে। কিন্তু বয়স্ক ও ছোটদের সমস্যা হচ্ছে। 

     লালবাগের চুনাখালি সর্বজনীনের মণ্ডপে ভিড়। নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)