• গরু পাচার মামলায় ‘সাগরদিঘি থানার কর্মী’কে জেরা সিআইডির! দাবি, তিনি এনামুল-ঘনিষ্ঠ
    আনন্দবাজার | ২২ মার্চ ২০২৩
  • গরু পাচার মামলার তদন্তে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এনামুল হকের এক ঘনিষ্ঠকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেন রাজ্যের সিআইডি আধিকারিকরা। বুধবার বেলা ১২টা নাগাদ বহরমপুরের সিআইডি অফিসে সেখ সাইদুল নামে ওই ব্যক্তিকে প্রায় ২ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। সিআইডি অফিস থেকে বেরিয়ে নিজেকে সাগরদিঘি থানার কর্মী বলে দাবি করেন ওই ব্যক্তি। তবে সিআইডি সূত্রে খবর, তাদের সন্দেহের তালিকায় থাকা সেখ সাইদুল আসলে সাগরদিঘি গরু হাটের মালিক।

    সিআইডির একটি সূত্র বলছে, গরু হাটের লিজ় সংক্রান্ত নথি অন্য এক ব্যক্তির নামে হলেও বকলমে হাটটির নিয়ন্ত্রণ ছিল এনামুলের ‘ঘনিষ্ঠ’ জেনারুল সেখ এবং সাইদুলের হাতে। বীরভূম থেকে গরু আনা হত সাগরদিঘি হাটে। সেখান থেকে এই সাইদুলই নাকি সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে গরু পাচার করতেন। তবে সে ক্ষেত্রে সাইদুল অন্য কোনও ‘ক্যারিয়ার’ ব্যবহার করতেন কি না সেটা তদন্তসাপেক্ষ। বেশ কিছু তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার সাইদুলকে ডেকে পাঠিয়েছিল সিআইডি। সূত্রের খবর, সাইদুলের উত্তরে সন্তুষ্ট নয় সিআইডি। পুনরায় সাইদুলকে ডাকা হতে পারে।

    ইতিমধ্যে গরু পাচারের তদন্তে সিআইডির হাতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এসেছে। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, বিএসএফ এবং শুল্ক দফতর যে সব গরু পাচারের আগেই বাজেয়াপ্ত করত, সেই গরুগুলি নিলামে কিনে নিতেন মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জের বড়শিমুলিয়া এলাকার বাসিন্দা জেনারুল। তিনি সেই সব গরু সাগরদিঘির হাটে নিয়ে এসে সাইদুলের হাতে তুলে দিতেন। সাইদুল সেখান থেকে আবার সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পাচার হত গরু। ইতিমধ্যেই বহরমপুর থেকে খাটাল মালিক জেনারুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই সইদুল সম্পর্কে এই সব তথ্য পেয়েছেন তদন্তকারীরা।

    প্রসঙ্গত, আন্তঃসীমান্ত এবং আন্তর্জাতিক গরু পাচার মামলার অন্যতম মূল অভিযুক্ত এনামুল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। সিআইডি সূত্রে খবর, ২০১৯ সালে মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। অভিযোগ ওঠে, প্রশাসনের বাজেয়াপ্ত করা গরুর থেকে ১৭৩৫টি গরু নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল। সিআইডি তদন্তে উঠে আসে, ওই বাজেয়াপ্ত গরুগুলোই আবার পাচার হয়েছে। আর এই ‘র‌্যাকেট’ চালাতেন এনামুলের তিন ভাগ্নে। তাঁদের সহযোগী হিসেবে কাজ করার অভিযোগ খাটাল মালিক জেনারুল এবং হাটের নিয়ন্ত্রক সাইদুলের বিরুদ্ধে।

    তবে সাইদুলের দাবি, তিনি কোনও গরু হাটের মালিক নন। তাঁর কথায়, ‘‘আমার নামে কোনও হাটের ডাক নেই। গরু পাচারের ব্যাপারে আমি কিচ্ছু জানি না। সাগরদিঘি থানায় কাজ করি। সিআইডি কেন ডেকেছে, কী কারণে ডেকেছে, বলতে পারব না। তবে যা জিজ্ঞেস করেছে তার উত্তর দিয়েছি।’’

  • Link to this news (আনন্দবাজার)