• পরীক্ষা হল থেকে রক্তদান শিবিরে
    এই সময় | ২৪ মার্চ ২০২৩
  • এই সময়, মেদিনীপুর: পরীক্ষা শেষ হতেই স্কুল থেকে বেরিয়ে সোজা শিবিরে গিয়ে রক্ত দিলো এক উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। মুমূর্ষু রোগীর জীবন বাঁচানো শুধু নয়, পরীক্ষার শেষের দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে এমনটা করেছে বলে জানিয়েছে মেদিনীপুরের 'শ্রী শ্রী মোহনানন্দ বিদ্যামন্দির'-এর ছাত্র আকাশ মিদ্যা। বৃহস্পতিবার তার শেষ দিনের পরীক্ষার বিষয় ছিল শিক্ষাবিজ্ঞান (এডুকেশন)।

    বন্ধুদের কাছে দু'দিন আগে খবর পেয়ে এদিন পরীক্ষা দিয়ে সে সোজা চলে যায় শহরের মল্লিকচক এলাকার রক্তদান শিবিরে। উদ্যোক্তাদের সে রক্ত দেওয়ার কথা জানায়। ১৮ বছর হয়েছে কিনা উদ্যোক্তারা তার কাছে জানতে চান। এরপরেই স্বাস্থ্যপরীক্ষা করে তার রক্ত নেওয়া হয়। আকাশের এই ইচ্ছেকে কুর্নিশ জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা।

    আকাশের বাড়ি মেদিনীপুর শহরের মির্জা বাজার এলাকায়। বাবা বাচ্চু মিদ্যা পেশায় রাজমিস্ত্রি। মা পার্বতী গৃহবধূ। দাদা বিশ্বজিৎ অন্যের দোকানে কাজ করেন। অভাবের সংসারে মাধ্যমিক পাশ করার পরে আর লেখাপড়া করতে পারেননি। তবে ভাইয়ের পড়াশোনা নিয়ে আগ্রহ রয়েছে তাঁর। আকাশের বাবা-মা-দাদা কোনও দিন রক্তদান করেননি। তাহলে হঠাৎ করে ইচ্ছেটা হলো কী করে?

    আকাশ বলে, 'ছোট থেকেই রক্তদান নিয়ে আমার উৎসাহ ছিল। ভাবতাম, কবে রক্ত দিতে পারব। মাধ্যমিক পাশ করার পরে অনেক রক্তদান শিবিরে উকিঝুঁকি মেরেছি। রক্ত দেওয়ার ইচ্ছেও প্রকাশ করেছি। কিন্তু বয়স না হওয়ায় রক্ত দিতে পারিনি। ১৮ বছর হতেই শহরে একটি শিবিরে গিয়ে এক বার রক্ত দিয়েছি। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার।'

    তার কথায়, 'রক্তদান শিবিরের কথা শুনলেই মন কেমন হয়ে যায়। মাত্র এক ইউনিট রক্ত, একটা রোগীর ক্ষেত্রে কী জরুরি, সেটা এক আত্মীয়ের বিপদে বুঝেছি। ভবিষ্যতে, সাধারণ মানুষের মধ্যে এই চেতনা গড়তে চাই।' রক্তদান আন্দোলনের কর্মী তথা কেশপুরের ব্লাড ডোনার্স ফোরামের সম্পাদক ফাকরুদ্দিন মল্লিক বলেন, 'ছেলেটি হবিবপুর সরস্বতী বিদ্যামন্দিরে পরীক্ষা দিয়ে সোজা চলে এসেছিল আমাদের শিবিরে। একেই বলে চেতনা। ধন্যবাদ জানাতে হয় আকাশকে।'
  • Link to this news (এই সময়)