• অয়ন সূত্রে ৩২ অ্যাকাউন্টে নজর
    এই সময় | ২৪ মার্চ ২০২৩
  • এই সময়, কলকাতা ও চুঁচুড়া: স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত প্রোমোটার অয়ন শীলের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে তাঁর নিজের, পরিবারের লোকজন, ঘনিষ্ঠ ও পরিচিতদের নামে ৩২টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হদিশ পেয়েছে ইডি। আপাতত সেই সব অ্যাকাউন্টের লেনদেনের দিকে নজর কেন্দ্রীয় তদন্তকারী অফিসারদের। পাশাপাশি, যে সব কোম্পানি, ফার্ম এবং সম্পত্তির নথি মিলেছে, তারও হিসেবনিকেশ করতে ইডি এখন ব্যস্ত।

    অয়নের বাড়ি থেকে মেলা প্রচুর কাগজপত্র, ডিজিটাল নথি ও চিরকুটের পাশাপাশি মিলেছে দু'টি নোটবুকও। ইডি সূত্রের খবর, ওই দু'টি নোটবুকের বেশির ভাগ পাতাতেই কিছু লেখা নেই। তবে কয়েকটি পাতায় কিছু নাম পেয়েছেন তদন্তকারীরা। সেই নামগুলো কি এজেন্ট, নাকি অয়নের ব্যবসার সঙ্গীদের, সেটা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা খতিয়ে দেখছে।

    ইডি সূত্রের খবর, সল্টলেকের এফডি ব্লকে অয়ন শীলের ভাড়া বাড়িতে মেলা কাগজপত্র পরীক্ষা করতে গিয়ে এখনও পর্যন্ত তাঁর নিজের পাশাপাশি তাঁর স্ত্রী, বান্ধবী, মা, বাবা, ছেলে-সহ আত্মীয়-পরিচিত-ঘনিষ্ঠদের নামে মোট ৩২টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের খোঁজ পাওয়া যায়। তা ছাড়া, এবিএস ইনফোজ়োন নামে অয়নের যে সংস্থা বিভিন্ন পুরসভায় নিয়োগের ক্ষেত্রে যুক্ত ছিল বলে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, সেই সংস্থার নামেও দু'টি অ্যাকাউন্টের হদিশ মিলেছে।

    এর পাশাপাশি, হুগলিতে অয়নের পেট্রল পাম্পের লেজ়ার বুক এবং ওই পাম্পের নামে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের খোঁজ পেয়েছেন তদন্তকারী অফিসাররা। ইডি দেখছে, ওই সংস্থাগুলোর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট মারফত কবে, কত টাকার লেনদেন হয়েছে। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় টাকা বিভিন্ন ভাবে খাটানো হয়েছে অথবা পাচারের চেষ্টা হয়েছে বলে যেহেতু ইতিমধ্যেই ইডির নজরে এসেছে, তাই সেই সব অ্যাকাউন্টের লেনদেনের তথ্যতালাশ চালাচ্ছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা।

    প্রাথমিক ভাবে তাঁরা জেনেছেন, আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠদের নামে বিভিন্ন জায়গায় সম্পত্তি কিনেছিলেন অয়ন। এর মধ্যে হুগলি ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় কয়েকটি সম্পত্তির হদিশ মিলেছে। করোনা ও লকডাউন পর্বে ২০২০ সালেও হুগলির গুড়াপে ১ কোটি টাকার সম্পত্তি কেনা হয়। তার আগের বছর ভাঙড়ে এবিএস ইনফোজ়োনের এক কর্মীর নামেও একটি সম্পত্তি কেনা হয়েছিল।

    ইডি সূত্রের খবর, দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে লাগোয়া গুড়াপের ঘোশলা এলাকায় একটি পেট্রল পাম্পের হদিশ মিলেছে। ওই পেট্রল পাম্পটি রয়েছে অয়নের ছেলে এবং তাঁর এক বান্ধবীর নামে। ২০২০-র করোনাকালে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা ওই পাম্পটি কেনেন অয়ন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাম্পের পাশেই একটি জমি কিনে সেখানে হোটেল তৈরির কাজও শুরু হয়। কিন্তু কোনও অজ্ঞাত কারণে হোটেল নির্মাণের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। তবে পাম্পের কর্মীরা জানিয়েছেন, অয়ন দামি গাড়ি করে পাম্পে আসা যাওয়া করতেন, কর্মীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতেন।
  • Link to this news (এই সময়)